মেশিন লার্নিং কী ? মেশিন লার্নিং কেন শিখবেন ? মেশিন লার্নিং শেখাটা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

মেশিন লার্নিং কী ? মেশিন লার্নিং কেন শিখবেন ? মেশিন লার্নিং শেখাটা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

প্রযুক্তি দক্ষতার ক্ষেত্রে ওপরের দিকেই রয়েছে মেশিন লার্নিং বা এমএল-বিষয়ক দক্ষতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতে মেশিন লার্নিং ও আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোতে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ ধরনের প্রযুক্তি খাতে দক্ষতা অর্জন করা জরুরি।
এ ধরনের প্রযুক্তি আমাদের অজ্ঞাতসারে জীবনকে সহজ করে তুলছে। আমরা এ ধরনের প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি যখন ফোনে ভয়েস কমান্ড দেন বা ইন্টারনেট ছবির খোঁজ করতে বলেন, মেশিন লার্নিং আপনার চাহিদা অনুযায়ী ফল দেখাতে পারে।

সম্প্রতি পেশাদার ব্যক্তিদের সামাজিক যোগাযোগের সাইট লিঙ্কডইন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে আগামী বছর সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন দক্ষতার তালিকা প্রকাশ করেছে। লিঙ্কডইনের বার্ষিক ইমার্জিং জবস রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন তালিকার শীর্ষে শিল্প খাতে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ও ডেটা সায়েন্স পদের চাহিদা বাড়ছে বলে দেখা গেছে, যা ভবিষ্যতেও বাড়বে।

মেশিন লার্নিং কী ?
Machine learning concept vector illustration
কম্পিউটারকে এমন একটি ক্ষমতা দেওয়া হয়, যার জন্য সেটি যেকোনো কিছু আগে থেকে ওই বিষয়ক প্রোগ্রাম লেখা ছাড়াই শিখতে পারে—এটিই মেশিন লার্নিং। নিজে থেকে শেখার ক্ষমতার কারণে কম্পিউটার যেকোনো কিছুই করতে পারে খুব সহজে। অন্যভাবে বলা যেতে পারে, যদি কম্পিউটারের খেলার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি তার জেতার হার বেড়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে সেই কম্পিউটারটি আসলেই শিখছে। মানে সে খেলতে খেলতে শিখছে, আর নিজে থেকে এই শেখার ক্ষমতাকেই বলে মেশিন লার্নিং।

মেশিন লার্নিং’-এর মূল তত্ত্ব হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ ডেটা বা তথ্য-উপাত্ত থেকে কোনো নির্দিষ্ট তথ্যের প্যাটার্ন বা ‘মডেল’ সঠিকভাবে বের করা। এরপর সেটি ব্যবহার করে নতুন কোনো তথ্যের শ্রেণিবিন্যাস করা, যেটি ‘ক্লাসিফিকেশন’ হিসেবে পরিচিত। কথা হচ্ছে, এই ক্লাসিফিকেশন কেন করা দরকার? উত্তর হচ্ছে—ধরুন আপনাকে বলা হলো এক, দুই ও পাঁচ পয়সার শ্রেণিবিন্যাস করতে, আপনি কীভাবে সেটি করবেন?

একটি উপায় হচ্ছে, আপনি পয়সাগুলো তাদের পরিধি আর ওজন অনুযায়ী ভাগ করতে পারেন। কারণ, একেক পয়সার পরিধি আর ওজন একটু ভিন্নই হয়ে থাকে। এই শ্রেণিবিন্যাস জিনিসটি মানুষের জন্য হয়তোবা অনেক সহজ, কিন্তু একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামের জন্য নয়। এই শ্রেণিবিন্যাস কোনো প্রোগ্রামারের বোঝার জন্য দরকার অনেক ডেটা, যা থেকে প্রোগ্রাম বুঝতে পারবে সঠিকভাবে পয়সার শ্রেণিবিন্যাস ও শনাক্তকরণ।

মেশিন লার্নিং কেন শিখবেন ?
সৃষ্টিকর্তা পুরো পৃথিবীকে ফেলে রেখেছেন হাজারো প্যাটার্নের মধ্যে। এই দিক থেকে মেশিন কিন্তু প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন প্যাটার্ন শিখছে বাচ্চাদের মত। সেই প্যাটার্ন থেকেই সে তার নিজের রুল সেট বের করে ফেলছে ওই মুহূর্তের জন্য। একমাত্র মেশিন লার্নিংই পারে এই প্যাটার্ন বুঝতে। ডেটা থেকে। সেটা ক্রাইম ডেটা হোক, আর ‘এমআরআই’ স্ক্যান হোক।

এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বাচ্চাটার প্রতিটা ছবি আপলোড, সেটা বাবা, মা অথবা আত্মীয় স্বজনরা করুন – অথবা বন্ধুদের হাজারো ছবির আশেপাশে দিয়ে থাকলেও মেশিনের জন্য সেটা সমস্যা নয়। মেশিনের কাছে সবকিছুই পিক্সেল, মুখের বিভিন্ন ফিচারের পার্থক্য সেও ধরতে পারে মানুষের মতো। সোশ্যাল মিডিয়ার শুরুতে আমাকে আপনাকে বিভিন্ন ছবি দেখিয়ে মেশিন বলেছে – কে কোনজন? আমরা ইচ্ছেমতো ‘ট্যাগ’ দিয়ে মেশিনকে শিখিয়েছি কে কোনজন। সময়ের সাথে। বেশ কিছু ছবিতে। সেটাই ট্রেনিং ডেটা। এতো এতো ডেটা নিয়ে এখন মেশিন প্রেডিক্ট করতে পারবে আমরা যদি দাড়ি গজাই, সানগ্লাস পড়ি। অথবা ২০ বছর পর আমার চেহারা কি হতে পারে।

মেশিন লার্নিয়ের প্রয়োগের ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে— ইমেজ রিকগনিশন স্পিচ রিকগনিশন, ও অনুমান।

অনুমান: মেশিন লার্নিং ও আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ব্যবহার করে কোনো বিষয়ে অনুমানের কাজে লাগানো যেতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার আগে কোনো ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করবে কি না, তার পূর্বানুমান মেশিন লার্নিং দিয়ে বের করা যায়। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রয়োজন হয় নির্দিষ্ট তথ্য কাজে লাগানোর বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে ডেটা অ্যানালিস্টদের ভূমিকা রাখতে হয়।

স্পিচ রিকগনিশন: সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে মানুষের কথা শুনে তা টেক্সটে রূপান্তর করতে পারে স্পিচ রিকগনিশন। মেশিন লার্নিং অ্যাপ্লিকেশন হচ্ছে একসেট সংখ্যা, যা স্পিচ সংকেত তুলে ধরে। বিভিন্ন ভাগে এ সংকেত ভাগ করে নির্দিষ্ট শব্দ বা ধ্বনিকে পৃথক করা যায়। বিভিন্ন সময় ও ফ্রিকোয়েন্সি হিসাব করে এসব স্পিচ সংকেত তৈরি করা হয়।

ইমেজ রিকগনিশন: মেশিন লার্নিং অ্যাপ্লিকেশনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ হচ্ছে ছবি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় কাজ করা। অনেক সময় বস্তুকে ডিজিটাল ইমেজ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। ডিজিটাল ইমেজের ক্ষেত্রে প্রতিটি ছবির পিক্সেল হিসাব করে তা পরিমাপ করা হয়। এতে ফেস ডিটেকশন ও ক্যারেক্টার ডিটেকশন দুটি পদ্ধতিতে কাজ করে।

মেশিন লার্নিং এর প্রয়োগ
কৃষি
শরীরবিদ্যা
অ্যাডাপ্টিভ ওয়েবসাইট
কার্যকর কম্পিউটিং
Computerekush.blogspot.com
Computerekush.blgspot.com
বায়োইনফরমেটিক্স
ব্রেইন মেশিন ইন্টারফেস
কম্পিউটার ভিশন
উপাত্তের গুণ
ব্যবহারকারী আচরণ বিশ্লেষণ
কাঠামোগত স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ
রোবট লোকোমোশন
সার্চ ইঞ্জিন
অনলাইন এডাভার্টিজমেন্ট
বিপণন
বিমা
মেশিন লার্নিং শেখাটা গুরুত্বপূর্ণ কেন?
মেশিন লার্নিং বর্তমান সময়ের অন্যতম একটা ট্রেন্ডিং টপিক। বর্তমানে পৃথিবী তে সবকিছুকে অটনোমাস করার চেষ্ঠা চলছে। আর এই অটনমাস করার পেছনে অন্যতম একটা ভূমিকা পালন করছে মেশিন লার্নিং। এমন অসংখ্য সমস্যা যেগুলো কোনদিন মানুষ চিন্তা করে নেই যে ম্যাশিন এর পক্ষে কওরা সম্ভব সেগুলা এখন মেশিন লার্নিং দিয়ে করা হচ্ছে। মেশিন লার্নিং এর থেকে আরেকটু উন্নত একটা পদ্ধতি এখন এসেছে যেটিতে বলা হয় ডিপ লার্নিং। যদি আপনি মনে করেন যে আপনি বর্তমানে পৃথিবীতে প্রযুক্তিগত ভাবে কোন অবদান রাখতে চান মেশিন লার্নিং একটি খুব ভালো জিনিস, মেশিন লার্নিং এর অনেক টিউটোরিয়াল এবং বই আছে যেগুলো আপনাকে শিখতে সাহায্য করবে।

বর্তমানে বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সাধারণ প্রতিষ্ঠানেও মেশিন লার্নিং প্রকৌশলীদের চাহিদা বাড়ছে। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন তথ্য কাজে লাগিয়ে তা থেকে প্রয়োজনীয় সুবিধা পেতে উৎসাহ দেখাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মেশিন লার্নিং প্রকৌশলী, ডেটা সায়েন্টিস্ট, এআই আর্কিটেক্ট, বিজনেস অ্যানালিস্ট ও পরিসংখ্যানবিদ হিসেবে কাজের সুযোগ রয়েছে এ খাতের কর্মীদের।
ধন্যবাদ♥♥♥

Post a Comment

0 Comments